মা শৈলপুত্রীর আবির্ভাবের অজানা কাহিনী:
" শৈলপুত্রী মহামায়ে সর্বসৌভাগ্যদায়িনী। " " সর্বক্লেশ হরে দেবী সর্ববিঘ্নবিনাশিনী।। " " নমস্তে বরদে শুভে সর্বঐশ্বর্য্যমন্ডিতা। " " প্রণমামি জগন্মাতঃ সর্বাভরণভূষিতা। "
1/1/20181 min read


কৃষ্ণা প্রতিপদ তিথির গভীর নিশিথে জপ সেরে সবেমাত্র শয্যাগ্রহন করেছেন অঘোরী আচার্য্য রণব্রত; হঠাৎ অনুভব করতে লাগলেন কর্পূর, ধূনো, গব্যঘৃতের তীব্রগন্ধ তাঁর শয্যাকক্ষে! ঘরে তিনি ছাড়া আর কেউ কোথাও নেই। দক্ষিণের জানালাটা শুধু হাঁ করে খোলা। বাইরে ঝিরঝিরে বৃষ্টির সঙ্গে মৃদু বাতাস বইছে। একটু শীত শীত লাগছে আচার্য্যজির। পাশে রাখা হাল্কা চাদরটা টেনে নিলেন গায়ে। তারপর নিজের অজান্তে কখন যে নিদ্রাদেবীর বশীভূত হয়ে পড়লেন বুঝতেই পারলেননা!


তারপর এল সেই পূণ্যলগন - সোনারী জরির পাড় দেওয়া লাল শাড়ীতে সজ্জিতা ধূম্রবরণা এক মাতৃমূর্তি এসে বসলেন আচার্য্যদেবের শয্যাপার্শ্বে। বললেন - কি রে রণ, চিনতে পারলি আমায়? আর কতদিন অপেক্ষা করাবি আমায়? নর্মদার বক্ষে শুয়ে আছি হাজার বছর; কবে তুই এসে আমায় নিয়ে যাবি তোর ঘরে! নিত্যপূজা করবি আমায়! দেরী করিসনে বাবা, আমায় নিয়ে আয় তোর কাছে। আমার নাম রাখিস "শৈলপুত্রী"।
আচার্য্যদেবের নিদ্রা গেল টুটে। মনে হাজার প্রশ্নের ভিড়! মধ্যভারতে পূণ্যতোয়া নর্মদা অতীদীর্ঘ ঐতিহ্যবাহী এক সুপ্রাচীন নদী। কত ইতিহাসের সাক্ষী ! নর্মদা-শিপ্রাকে যোগ করলে উজ্জয়িনীর মহাকালেশ্বর মন্দির আর কত দূর? কোথায় আছেন মাতা "শৈলপুত্রী"? কিভাবে তাঁর অন্বেষণ করা যাবে? কার কাছে গিয়ে কি বলা যায়? বললেইবা কে বিশ্বাস করবে?
আমার মোবাইল বেজে উঠল ভোররাতে। ঘড়িতে তখন প্রাতঃ ৩-৩০ মিঃ। কে আমায় ফোন করল এ সময়ে? তাড়াতাড়ি ফোন ধরলাম। ফোনের ওপ্রান্তে আচার্য্যদেব এক নিঃশ্বাসে আমায় তাঁর সপ্নাদেশের সবকথা খুলে বললেন। পরামর্শ চাইলেন আমার। কথা বলতে বলতে পূবের আকাশ আলোকরে দিনমণি সূর্যদেবের উদয়। আমি বললাম অপেক্ষা করুণ মহারাজ , আগামী ৩ দিনের মধ্যেই আপনার করনীয় কি জানতে পা
তিন দিন লাগলনা । ঘটনার একদিন পর উজ্জয়িনী থেকে রণর এক গুরুভাই ফোন করে জানালেন নর্মদাবক্ষ হতে প্রাপ্ত একটি মাতৃশিলার কথা । শিলাটি যে আচার্য্য রণব্রতকে নিত্যপূজার জন্য দেওয়া হবে সে ব্যাপারে মঠের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের কথাও তিনি জানাতে দ্বিধা করলেননা।
নাওয়া খাওয়া ভুলে আচার্য্যদেব উজ্জয়িনী গেলেন আর সেখান থেকে একটি প্রাইভেট গাড়ীতে করে পরম সন্তর্পনে মা "শৈলপুত্রীকে" আনলেন কলকাতায় নিজ বাসভবনে।
জয় মা শৈলপুত্রী!